ওমরাহ পালনের সম্পূর্ণ নিয়ম (নারী ও পুরুষ)
সারাবিশ্ব থেকেই পবিত্র নগরী মক্কার যাচ্ছেন মুমিন মুসলমান নর-নারী।
মক্কা গিয়েই আদায় করবেন ওমরা।
হজের আগে নারী-পুরুষের ওমরা পালনের ধারাবাহিক নিয়মগুলো যেমন জেনে নেওয়া জরুরি, তেমনি ওমরার রোকনগুলোতে পড়া দোয়াগুলোও জেনে নেওয়া জরুরি।
ওমরা আদায়ে নারী-পুরুষের জন্য রয়েছে নির্ধারিত ৪টি কাজ ও গুরুত্বপূর্ণ দোয়া।
৪টি কাজ সম্পাদনে নারী-পুরুষের জন্য রয়েছে সুস্পষ্ট নীতিমালা।
যা তুলি ধরা হলো—
✅ ইহরাম বাধা।
✅ কাবা শরিফ (৭ চক্করে) তাওয়াফ করা।
✅ সাফা-মারওয়া সাঈ করা।
✅ হলক করা (মাথা মুণ্ডন করা)।
পুরুষরা পুরো মাথার চুল ছোট করবে বা মুন্ডন করবে, আর নারীরা চুলের আগা কর্তন করার মাধ্যমে হালাল হয়ে যাবে।
প্রথম কাজ : ইহরাম বাঁধা (ফরজ)
ইহরাম পরিধানের আগে বেশ কিছু করণীয় আছে।
যেমন—হাত-পায়ের নখ কাটা, গোঁফ, চুল ও নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা ইত্যাদি।
ইহরাম পরিধানের আগে গোসল করা সুন্নত।
এরপর পুরুষদের সেলাইবিহীন পোশাক ও নারীদের যেকোনো উপযুক্ত পোশাক পরিধানের মাধ্যমে ইহরাম পরিধান করতে হবে।
নির্ধারিত মিকাত থেকে (সম্ভব হলে) গোসল করে অথবা অজু করে নিতে হবে।
পুরুষরা সেলাইবিহীন ২ টুকরা কাপড় পরবে।
নারীরা পর্দাসহ শালীন পোশাক পরবে।
অতঃপর ২ রাকাআত নামাজ পড়ে ইহরামের নিয়ত করবেন—
اَللَّهُمَّ اِنِّي اُرِيْدُ العُمْرَةَ فَيَسِّرْهُ لِيْ وَ تَقَبَّلْهُ مِنِّي
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুল উমরাতা ফাইয়াসসিরহু লি ওয়াতাকাব্বালহু মিন্নি।’
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি ওমরার ইচ্ছা করছি; আপনি আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন।
তালবিয়া পড়া
(একবার তালবিয়া পড়া শর্ত)
لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ – لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ – اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ – لاَ شَرِيْكَ لَكَ
উচ্চারণ:
“লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শরীকালাকা লাব্বাইক,
ইন্নাল হামদা ওয়ান নিইমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শরীকালাক।”
তালবিয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ দোয়াটিও পড়বে—
اَللَّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ النَّارِ
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিদাকাওয়াল জান্নাতা ওয়া আউযুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান্নার।’
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং আপনার অসন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাইছি।
বাংলাদেশ থেকে ইহরাম পরিধান
যারা বাংলাদেশ থেকে সরাসরি মক্কায় যাবেন, তারা বাসা, বিমানবন্দর বা বিমানের ভিতর থেকেই ইহরাম বাঁধার কাজ সম্পন্ন করবেন।
মসজিদে হারামে প্রবেশ
ওমরা উদ্দেশ্যে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করে এ দোয়া পড়তে হবে—
بِسْمِ اللهِ وَ الصّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ
أعُوْذُ بِاللهِ الْعَظِيْم وَ بِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَ سُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ
اَللهُمَّ افْتَحْ لِىْ اَبْوَابَ رَحَمَتِكَ
উচ্চারণ:
বিসমিল্লাহি ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ।
আউযু বিল্লাহিল আযীমি ওয়া বিওয়াজহিহিল কারীমি ওয়া সুলতানিহিল কাদীমি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম।
আল্লাহুম্মা ফতাহ লি আবওয়াবা রাহমাতিকা।
কাবা শরিফ দেখা
কাবা ঘর দেখে এই দোয়া পড়বে—
اَللَّهُمَّ أَنْتَ السّلَامُ وَ مِنْكَ السَّلَامُ ...
(পূর্ণ দোয়া অপরিবর্তিত থাকবে)
দ্বিতীয় কাজ : তাওয়াফ করা (ফরজ)
ওমরার দ্বিতীয় ফরজ কাজ হলো কাবা শরিফ তাওয়াফ করা (৭ চক্কর)।
হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে দোয়া পড়বে—
بِسْمِ اللهِ اَللهُ اَكْبَر - اَللَّهُمَّ اِيْمَنًا بِكَ ...
(দোয়া ও উচ্চারণ অপরিবর্তিত থাকবে)
ইজতিবা ও রমল (পুরুষদের জন্য সুন্নাত)
ইজতিবা: চাদরটি এক কাঁধ উন্মুক্ত রেখে পরা।
রমল: প্রথম তিন চক্করে দ্রুত গতিতে হাঁটা।
নারীদের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়।
মাকামে ইব্রাহীমে নামাজ ও জমজমের পানি
তাওয়াফ শেষে সম্ভব হলে মাকামে ইব্রাহীমের কাছে দুই রাকাআত নামাজ পড়া ও জমজমের পানি পান করা সুন্নাত।
তৃতীয় কাজ : সাফা-মারওয়ায় সাঈ করা (ওয়াজিব)
সাফা পাহাড়ে আরোহন করে আয়াত পাঠ করতে হবে—
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ ...
তারপর দোয়া ও তসবিহ পাঠ করে সাতবার সাফা-মারওয়ার মধ্যে আসা-যাওয়া করতে হবে।
পুরুষরা সবুজ চিহ্নিত স্থানে দ্রুত চলবে, নারীরা স্বাভাবিকভাবে হাঁটবে।
চতুর্থ কাজ : মাথা মুন্ডন বা চুল কর্তন (ওয়াজিব)
সাঈ শেষ করে পুরুষরা মাথা মুন্ডন করবে বা চুল ছোট করবে।
নারীরা চুলের আগা সামান্য অংশ কর্তন করবে।
এতে তারা ইহরাম থেকে মুক্ত হবে।
উমরাহ করার নিয়ম । শায়খ আহমাদুল্লাহ - Click Here
Umra korar niyom | Shaikh Ahmadullah - Click Here
নারী ও পুরুষের ইহরাম পরিধানের সহজ পদ্ধতি ভিডিও - Click Here
আরো
বিস্তারিত জানতে - Click here
Comment (0)
Leave A Comment: